ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৯ হাজার ছাড়িয়েছে। ভারতীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, সোমবার পর্যন্ত দেশটিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৯ হাজার ১৫২। এদের মধ্যে ৮৫৬ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩০৮ জনের। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এখবর জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, করোনার বিস্তার ঠেকাতে দেশটিতে জারি করা ২১ দিনের লকডাউনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে মঙ্গলবার। শনিবার ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকের পরই লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর আভাস পাওয়া গিয়েছে। এই অবস্থায় পয়লা বৈশাখ সকাল ১০টায় ফের জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন মোদি। ধারণা করা হচ্ছে, ভাষণে লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করতে পারেন তিনি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, ভারতে লকডাউনের সুফল নজরে আসছে।
২১ দিনের লকডাউনের ফলে খুব সামান্য হলেও করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার কমছে, যা বিশেষ উল্লেখযোগ্য। লকডাউনের ফলে সামাজিক মেলামেশা কমেছে। ফলে ভাইরাস ছড়াচ্ছে কম। এই প্রবণতা বজায় থাকলে আগামী দিনে মহামারির প্রকোপ কমানো সম্ভব। চেন্নাইয়ের ইন্সটিটিউট অব ম্যাথমেটিক্যাল সায়েন্সেসের বিজ্ঞানী সিতাভ্র সিনহার পর্যালোচনায় এমন আভাস মিলেছে।
বিজ্ঞানী সিতাভ্র সিনহা জানান, আগামী ২০ এপ্রিলের মধ্যে ভারতে প্রায় ২০ হাজার মানুষ করোনা আক্রান্ত হবেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। লকডাউন না হলে সেই সংখ্যা পৌঁছাতে পারত প্রায় ৩৫ হাজারে। ১১ এপ্রিল পর্যন্ত দেশে প্রায় সাড়ে আট হাজার মানুষ কোভিড-১৯ পজিটিভ, যা ৫ এপ্রিলের সংখ্যার প্রায় দ্বিগুণ। কিন্তু ভাইরাস প্রজননের এই হারকে মারাত্মক বলে মানতে নারাজ তিনি। মার্চের তুলনায় ভারতে করোনা প্রজননের এই (এপ্রিল ৫-১১) হারকে উল্লেখযোগ্যভাবে কম বলেই মনে করেন সিনহা। ভাইরাসের প্রজনন বলতে আক্রান্ত ব্যক্তির দ্বারা অন্যদের শরীরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়াকে ধরা হয়।
পরিসংখ্যান অনুসারে, ভারতে প্রথমদিকে একজন করোনা আক্রান্তের থেকে অন্য ১.৮৩ জনের দেহে ভাইরাসের প্রবেশ ঘটছিল। এপ্রিল ৬ থেকে ১১-এর মধ্যে সেই হার কমে হয়েছে ১.৫৫ জন। বিজ্ঞানী সিতাভ্র সিনহা বলেন, ‘নিশ্চিতভাবে এখনই বলা সম্ভব না হলেও সম্ভবত লকডাউনের কারণেই করোনা বৃদ্ধির গ্রাফ ভারতে কমছে।’ তবে, এই প্রবণতা যেকোনও সময় বদলে যেতে পারে বলে জানান তিনি।
গাণিতিক এই পর্যালোচনার ভিত্তিতেই ভারত আরও দু’সপ্তাহ লকডাউন বাড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে খবরে উল্লেখ করা হয়েছে।