যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের কিছু এলাকার বাতাস এতটাই দূষিত যে সেখানে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া বছরে ১৬০টি সিগারেট গ্রহণের সমান ক্ষতিকর।
সম্প্রতি এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক দাতব্য সংস্থা ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশন (বিএইচএফ)।
বিএইচএফের মতে, যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে দূষিত বায়ুর এলাকা হচ্ছে ইস্ট লন্ডনের নিউহ্যাম। আর সবচেয়ে পরিষ্কার বাতাস স্কটল্যান্ডের হেব্রিডিসে।
নিউহ্যামের বাতাসে শ্বাস নেওয়া বছরে ১৫৯টি সিগারেট গ্রহণের সমান ক্ষতিকর। এছাড়া ওয়েস্টমিনিস্টারে ১৫৭টি, কেনসিংটন, চেলসি, আইলিংটন, ওয়াল্টহ্যাম ফরেস্টে ১৫৬টি এবং হ্যাকনে এলাকায় শ্বাস নেওয়া বছরে ১৫৫টি সিগারেট গ্রহণের সমান।
লন্ডনের বাইরে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা বার্কশায়ারের স্লাও (১৪৫টি সিগারেট), কেন্টের ডার্টফোর্ড (১৪৪টি), পোর্টসমাউথ (১৪২টি) ও মিডওয়েতে (১৪২টি)।
বিপরীতে যুক্তরাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন বাতাস স্কটল্যান্ডের হেব্রিডিস (৪০টি সিগারেটের সমান), শেটল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ (৪৩টি), দ্য হাইল্যান্ডস (৪৫টি), অর্কনে (৪৬টি) এবং আর্গাইল ও বিউটে (৪৮টি)।
দূষণ নিয়ন্ত্রণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিওএইচও) বায়ুদূষণ সীমা কার্যকর করার জন্য পরবর্তী সরকারকে আহ্বান জানান বিএইচএফ।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বর্তমান সীমা অনুযায়ী প্রতি ঘনমিটার বাতাসে ২৫ মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত ফাইন পার্টিকুলেট ম্যাটার (পিএম) বা দূষিত পদার্থ থাকতে পারে। যুক্তরাজ্য এ সীমার নিচেই অবস্থান করছে।
ডব্লিওএইচও নির্ধারিত সীমা অনুযায়ী, প্রতি ঘনমিটার বাতাসে ১০ মাইক্রোগ্রাম দূষিত পদার্থ থাকতে পারে। এ সীমা ছাড়ালেই তা বায়ুদূষণের পর্যায়ে পড়ে।
বিএইচএফের মতে, ২৫ মাইক্রোগ্রাম পিএম বায়ুদূষণ হৃদপিণ্ডের জন্য ‘মারাত্মক ক্ষতিকর’। এ কারণে হৃদরোগ, স্ট্রোক ও অন্য স্বাস্থ্য সমস্যা আরও বাড়ছে।
এছাড়া, বাড়ছে অকাল মৃত্যু ঝুঁকি। যুক্তরাজ্যে প্রতিবছর প্রায় ১১ হাজার মানুষ হৃদরোগ ও স্ট্রোকের কারণে মারা যান।
বিএইচএফের হেলথকেয়ার ইনোভেশনের নির্বাহী পরিচালক জ্যাকব ওয়েস্ট বলেন, বায়ুদূষণ অন্যতম একটি জরুরি স্বাস্থ্য সমস্যা। কিন্তু অনেক বছর ধরে সমস্যাটি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে না।
বায়ুদূষণ কমাতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া না হলে এসময়ের নিষ্ক্রিয়তা ভবিষ্যতের গ্লানিতে পরিণত হবে।