প্রথমে ছিলেন শিক্ষার্থী, পরে যোগ দেন শিক্ষক হিসেবে। অথচ ২০ বছরের পরিচিত ক্যাম্পাসে ঢুকতে ভয় পাচ্ছেন দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুচরিতা সেন। রবিবার সন্ধ্যায় চলা হামলায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আহত হয়েছেন তিনিও। সোমবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে তিনি বলেন, ‘ক্যাম্পাসে ঢুকতে ভয় করছে আমার।’
রবিবার সন্ধ্যায় জেএনইউতে প্রবেশ করে হামলা চালায় একদল মুখোশধারী। লাঠি ও পাথর হাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে ত্রাসের সঞ্চার করে তারা। হামলায় অন্তত ৩৪ জন আহত হয়। এদের মধ্যে ১৯ শিক্ষার্থী ও ৫ জন শিক্ষক। ঘটনার পর সংবাদমাধ্যমের অনুসন্ধান থেকে জানা যায়, বিজেপি-সংশ্লিষ্ট হিন্দুত্ববাদী ছাত্র সংগঠন এবিভিপি এই হামলা চালিয়েছে।
সোমবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান সেন্টার ফর স্টাডিজ় অফ রিজিওনাল ডেভেলপমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক সুচরিতা। তিনি বলেন, “ক্যাম্পাসে হঠাৎই হিংসা ছড়িয়ে পড়ল। বেশিরভাগই মুখ ঢাকা ছিল, লাঠিসোঁটা ছিল ওদের হাতে। ওরা পাথরও ছুড়ছিল আমাদের লক্ষ্য করে। একটা পাথর আমার কাঁধে এসে লাগে খুব জোরে। তার পরে একটা আধলা ইট ছুড়ে মারে আমার মাথায়।’
ঘটনার পরেই রক্তাক্ত অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হেল্থ সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। তার পরে গভীর ক্ষত দেখে পাঠানো হয় এইমস হাসপাতালে। ছাড়া পাওয়ার পরে তিনি বললেন, “আমার ভয় লাগছে ক্যাম্পাসে ঢুকতে।”
সুচরিতা সেনের সঙ্গেই হাসপাতালে পাঠানো হয় ছাত্র সংসদের সভাপতি ঐশী ঘোষকে। তার মাথা ফেটেও গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। রক্তাক্ত অবস্থায় একটি ভিডিওতে তিনি জানান, নৃশংস ভাবে মারধর করা হয়েছে তাকে। পরে জানা যায়, ১৬টি সেলাই পড়েছে তার মাথায়।
উল্লেখ্য, ন্যায়-সমতা ও প্রগতির পক্ষে অগ্রগামী ভূমিকা নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের। সেখানকার ছাত্র সংসদে বামপন্থীদের প্রাধান্য। সবশেষ ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত ছাত্র সংসদ নির্বাচনেও সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সহ সম্পাদক- সবকটি আসনেই জয়ী হন বাম প্রার্থীরা।