২২ বছর পর ত্রিপুরায় স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পেলো রিয়াং জনগোষ্ঠী

মিজোরাম রাজ্য থেকে এসে ত্রিপুরা রাজ্যের উত্তর জেলার কাঞ্চনপুর ও পানিসাগর এলাকায় প্রায় ২২ বছর ধরে অস্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছিল ৩৫ হাজার ব্রু বা রিয়াং জনজাতি অংশের মানুষ। এবার ত্রিপুরায় তাদের স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি দিল ভারত সরকার।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দিল্লিতে ত্রিপুরা সরকার, মিজোরাম সরকার এবং ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এর মধ্যে এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এমন সিদ্ধান্তের খবর ত্রিপুরায় ছড়িয়ে পড়ার পর রাজ্যজুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা গেছে।

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেসের সহ-সভাপতি তাপস দে বলেন, এটি নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ। ২২ বছরের বেশি সময় ধরে এই লোকগুলো মানবেতর জীবন যাপন করছিলো। অবশেষে ত্রিপুরায় তাদের স্থায়ী বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া হলো।

ত্রিপুরা রাজ্যে বিজেপি সরকারের শরিক দল আইপিএফটির সহ-সভাপতি মঙ্গল দেববর্মা বলেন, ব্রু বা রিয়াং জনজাতি অংশের মানুষের স্থায়ী পুনর্বাসনের জন্য ভারত সরকারের কাছে বারবার দাবি জানানো হচ্ছিল। অবশেষে সরকার দাবি মেনে নিয়েছে। এটা খুশির খবর। এদের জন্য এককালীন চার লাখ রুপি এবং দুই বছর রেশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ত্রিপুরা রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল সিপিআই (এম) এর রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পবিত্র কর বলেন, দীর্ঘ ২২ বছর পর জনজাতি অংশের মানুষগুলোর সমস্যার একটি সমাধান হয়েছে। তারা যখন মিজোরাম থেকে ত্রিপুরায় পালিয়ে আসে তখন মানবিক দিক বিবেচনা করে সাবেক বামফ্রন্ট সরকার থাকা ও রেশনের ব্যবস্থা করেছিল। পরে ভারত সরকার এগিয়ে আসে।

ত্রিপুরার উত্তর জেলার যেসব এলাকায় রিয়াং জনজাতিরা রয়েছেন সেই এলাকায় বসবাসরত বাঙালি অংশের মানুষের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন হলো নাগরিক সুরক্ষা মঞ্চ। মঞ্চের সদস্যরা রিয়াং জনজাতিদের ত্রিপুরা রাজ্যে পুনর্বাসনের ঘোর বিরোধী।

ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্তের পর নাগরিক সুরক্ষা মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক অনুপম নাথের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা প্রথম থেকে তাদের এখানে বসবাসের বিরোধিতা করে আসছি। ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা জরুরি বৈঠকে বসবো।

১৯৯৭ সালে জাতিগত দাঙ্গার কারণে রিয়াং অংশের মানুষ মিজোরাম ছেড়ে ত্রিপুরায় আশ্রয় নিয়েছিল। এরপর থেকে তারা ত্রিপুরায় রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *