দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়া পৌর সদরের শেয়ানপাড়া, সাতকানিয়ার পুরানগড় ও চন্দনাইশের দোহাজারী পৌরসভার জামিজুরী এলাকায় ৬ বাড়ির ১৫ পরিবারকে লকডাউন ঘোষণা করেছে প্রশাসন। চট্টগ্রাম নগরীর দামপাড়ায় করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির নিকটাত্মীয় হওয়ায় এবং ওই ব্যক্তির পরোক্ষ সংস্পর্শে আসার কারণে এ বাড়িগুলো লকডাউন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
শনিবার দুপুরে পটিয়া পৌর সদরের ৪নং ওয়ার্ডের শেয়ানপাড়া এলাকায় একটি, তার আগে শুক্রবার মধ্যরাতে সাতকানিয়ার পুরানগড় ইউনিয়নে চারটি এবং দোহাজারী পৌরসভার জামিজুরী এলাকায় একটি বাড়ি লকডাউন করে প্রশাসন। পাশাপাশি ওইসব বাড়ির সব সদস্যকে বাড়িতে অবস্থানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির স্ত্রীকে দেখতে যাওয়ায় থার্ড লেভেল কন্ট্রাকে আসার কারণে পটিয়া উপজেলার খরনা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ফকিরপাড়ার এক পরিবারকে ১৪ দিনের জন্য বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়।
জানা গেছে, চট্টগ্রামের দামপাড়া এলাকায় যে ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন তার মেয়ে ও মেয়ের শাশুড়ি সম্প্রতি সৌদি আরব থেকে ওমরাহ পালন করে দেশে আসেন। তার দুই মেয়ের মধ্যে প্রথম মেয়ের শ্বশুরবাড়ি সাতকানিয়ার পুরানগড় এলাকায়। মেঝ মেয়ের শ্বাশুরবাড়ি পটিয়া পৌরসভার শেয়ানপাড়ায়। গত ১২ মার্চ ওমরা শেষে মেয়ের শ্বাশুড়ি সাতকানিয়ার পুরানগড়ে আসার পথে বেয়াইয়ের দামপাড়াস্থ বাসায় কিছুক্ষণ অবস্থান করেন। সেখান থেকে তিনি বিমানবন্দর থেকে আসা একই গাড়িতে করে সাতকানিয়ার পুরানগড়ে চলে আসেন। তবে মেয়ে দামপাড়াস্থ বাবার বাসায় থেকে যান। এই তথ্য জানার পর সাতকানিয়া উপজেলা প্রশাসন পুরানগড়ের ওই বাড়িসহ আশ-পাশের আরও বেশ কয়েকটি বাড়ি লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয়। ফলে মধ্যরাতে সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর এ আলমের নেতৃত্বে পুরানগড়ে ৪টি বাড়ি লকডাউন করা হয়। এসময় বাড়িগুলোতে লাল পতাকা টাঙিয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে, চট্টগ্রাম নগরীর দামপাড়ায় যে ব্যক্তির শরীরে করোনা সংক্রমণ পাওয়া গেছে তার মেয়ের শ্বশুরবাড়ি পটিয়া পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের শেয়ান পাড়ায়। গত ক’দিন পূর্বে তাঁর মেঝ মেয়ের শ্বশুর চট্টগ্রাম নগরের বাসা থেকে পটিয়া পৌরসভাস্থ নিজ বাসায় আসেন। মেঝ মেয়ের স্বাামী করোনা আক্রান্ত রোগীটির সাথে হাসপাতালে আসা-যাওয়া করেছেন। ফলে শনিবার দুপুরে পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা জাহান উপমার নেতৃত্বে পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডে ২টি বাড়ি লকডাউন করা হয়। এসময় বাড়িগুলোতে লাল পতাকা টাঙিয়ে দেয়া হয়।
অপরদিকে, চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত রোগীর আত্মীয় হওয়ায় এবং রোগীর পরোক্ষ সংস্পর্শে যাওয়ায় দোহাজারী পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড জামিজুরী এলাকার ১৫ সদস্য বিশিষ্ট ১টি বাড়িও লকডাউন করে চন্দনাইশ উপজেলা প্রশাসন। খবর পেয়ে রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমতিয়াজ হোসেনের নেতৃত্বে উপজেলা প্রশাসন ওই বাড়িটি লকডাউন করে লাল পতাকা টাঙিয়ে দেয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা জাহান উপমা, সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর এ আলম এবং চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমতিয়াজ হোসেন জানান, বাড়িগুলোর সদস্যরা পুলিশের নজরদারিতে থাকবেন। তাদের পরিবারকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগামী দশ দিনের উপযোগী খাদ্য সামগ্রী প্রদান করা হয়।