বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকে কর্মবিরতিতে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে বড় জাহাজ থেকে ছোট জাহাজে পণ্য খালাস বন্ধ হয়ে গেছে।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকালে ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক খোরশেদ আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ভারতগামী শ্রমিককে ল্যান্ডিং পাস প্রদান, সব নৌযান শ্রমিককে মাসে ৪ হাজার টাকা খাদ্য ভাতা, সমুদ্র ও রাত্রিকালীন ভাতা নির্ধারণ, কর্মস্থলে ও দুর্ঘটনায় মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণ, মালিক কর্তৃক নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক প্রদান, নদীর নাব্যতা রক্ষা ও প্রয়োজনীয় মার্কা, বয়া ও বাতি স্থাপন, বাল্কহেডসহ সব নৌযান ও নৌপথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও ডাকাতি বন্ধ করা, ২০১৬ সালের গেজেট অনুযায়ী কেরানি, কেবিন বয়, ইলেকট্রিশিয়ানসহ সব নৌশ্রমিকদের বেতন প্রদানের দাবিতে আমরা কর্মবিরতি পালন করছি।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামে ফেডারেশনভুক্ত প্রায় ৩ হাজার নৌযান রয়েছে।
সম্প্রতি নৌযান শ্রমিকদের একাংশের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে খাদ্যভাতা, পরিচয়পত্র, সার্ভিস বুকসহ কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা নৌযান শ্রমিকদের সঙ্গে প্রতারণা, চক্রান্ত ও প্রহসন। আদি ও মূলধারার নৌযান সংগঠনগুলোকে বাইরে রেখে আমাদের যৌক্তিক দাবি আদায়ের আন্দোলন ব্যাহত করতেই ওই প্রহসন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ইউনিয়নের চট্টগ্রাম শাখার সহ সভাপতি নবী আলম জানান, শুক্রবার দিনগত রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে নৌযান শ্রমিকেরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে কর্মবিরতি পালন করছেন। আউটারে কোনো লাইটার জাহাজ নেই। সব লাইটার, অয়েল ট্যাংকার, বাল্কহেড, লঞ্চ কর্ণফুলী নদীসহ উপকূলীয় এলাকায় রয়েছে। কর্মবিরতি পালনের বিষয়টি আমরা মনিটরিং করছি।
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে বড় জাহাজে খোলা পণ্য গম, চিনি, সিমেন্ট ক্লিংকার, ডাল ইত্যাদি আমদানির সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তারা উদ্বেগ জানিয়েছেন নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতিতে। কারণ বেশিরভাগ খোলা ভোগ্যপণ্য ও সিমেন্ট, চিনি, ভোজ্যতেল, কয়লা, পাথর ইত্যাদি বড় জাহাজে বন্দরের বহির্নোঙরে (সাগরে) আসে। ছোট ছোট জাহাজে এসব পণ্য নামিয়ে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ নৌপথে বিভিন্ন শিল্পকারখানা, নদীবন্দর ও ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়।
খাতুনগঞ্জের একজন ভোগ্য পণ্যের আমদানিকারক বলেন, কয়েক দিন আগে লাইটারেজ জাহাজের শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করেছেন, এখন নৌযান শ্রমিকরা কর্মবিরতিতে। এতে নিরবচ্ছিন্ন ভোগ্য পণ্য ও কাঁচামাল সরবরাহে যেমন বিঘ্ন ঘটছে তেমনি বন্দরে জাহাজের বেশি দিন অপেক্ষার কারণে আমদানিকারকের খরচও বাড়ছে। তাই সব কিছু আইনি কাঠামো ও শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসা উচিত।
বহির্নোঙরে পণ্য খালাস ও নৌপথে পরিবহন বন্ধ থাকলেও বন্দরের মূল জেটিতে কনটেইনার হ্যান্ডলিং স্বাভাবিক রয়েছে।
বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, বন্দরের এনসিটি, সিসিটি ও জিসিবিসহ মূল জেটিতে কনটেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিং স্বাভাবিক রয়েছে।