কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার এক দিনের মধ্যে এক রিকশা চালকের মৃত্যু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশন ইউনিটে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। তিনি ওই উপজেলারই বাসিন্দা। তাঁর বয়স হয়েছিল ৫২ বছর।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, মারা যাওয়া ব্যক্তি অন্তত দশ বছর ধরে শ্বাসকষ্টের রোগী ছিলেন। বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে এই রোগের চিকিৎসা নিতেন। শ্বাসকষ্ট সমস্যা নিয়ে রিকশা চালিয়ে আসছিলেন। গতকাল সোমবার সকাল দশটার দিকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তিনি হাসপাতালে আসেন। এসে শ্বাসকষ্টের কথা জানান। শ্বাসকষ্টের কথা জানার পর তাঁকে আইসোলেশন ইউনিটে নেওয়া হয় এবং আইসোলেশন ব্যবস্থাপনায় রাখা হয়। গতকালই তাঁর শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে কিশোরগঞ্জ সিভিল সার্জন কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। বিকেল থেকে শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়তে থাকে। স্থানীয় ব্যবস্থাপনায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনোভাবেই শ্বাসকষ্টের মাত্রা কমিয়ে আনা যায়নি। আজ সকাল সোয়া নয়টার দিকে তিনি মারা যান।
মৃত ব্যক্তির স্ত্রী বলেন, ‘আমার স্বামী জানতেন করোনা পরিস্থিতিতে শ্বাসকষ্ট থাকলে সমস্যা। এই নিয়ে দুশ্চিন্তা করতেন। শ্বাসকষ্ট বাড়লেই মনে করতেন তাঁর করোনা হয়ে গেছে। তবে হাসপাতালে যেতে ভয় পেতেন। দুই দিন ধরে সমস্যাটা অনেক বড় হয়। তারপরও হাসপাতালে আসতে চান না। পরে আমরা অনেক বুঝিয়ে হাসপাতালে নিয়ে আসি।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জালাল আহমেদ রিকশা চালকের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে আসবার পর থেকেই করোনা সন্দেহে পরবর্তী উদ্যোগগুলো নিয়েছি। বিশেষ করে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে নমুনা গতকাল পাঠানো হয়নি। আজ পাঠানো হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট পেয়ে যাব। তখন মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।’
ইসলামী ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ওই ব্যক্তির লাশ দাফন করা হবে বলে জানান জালাল আহমেদ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দিপ্তীময়ী জামান বলেন, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই লোকটির পরিবারের প্রত্যেক সদস্যকে হোম কোয়ারেন্টিনে (বাড়িতে সঙ্গনিরোধ) পাঠানো হয়। নির্দেশ দেওয়া হয় ওই বাড়িতে যেন অন্য কেউ প্রবেশ না করে। এখন বাড়িটির চারপাশের অন্যদেরও চলাচল সীমিত করা হয়েছে।