দেশে গণতন্ত্র ফিরে না আসলে নারীর অধিকার পাওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে না পারলে গণতন্ত্রও মুক্তি পাবে না। নারীর অধিকারও প্রতিষ্ঠা হবে না।’
রবিবার (৮ মার্চ) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে মহিলা দল আয়োজিত র্যালির উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্র না থাকলে নারীর অধিকারও থাকবে না। বাংলাদেশে সেটি যে আজকে নেই— তা বারবার প্রমাণিত হচ্ছে।
র্যালিটি নয়াপল্টন থেকে শুরু হয়ে নাইটেঙ্গল মোড় ঘুরে আবারও বিএনপি কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে বলে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তিনি নারীদের জন্য বহু কাজ করেছেন। নারীশিক্ষার জন্য সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কাজটি তিনি করেছেন। সেটি হলো নারীদের জন্য অবৈতনিক শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তন।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘সন্ত্রাসমুক্ত নিরাপদ সমাজ গড়ে তোলার জন্য নারীদেরকে অবশ্যই এগিয়ে আসতে হবে। আমরা দেখেছি, দেশের মহিলারা অত্যন্ত নিষ্ঠাবান। পরিবারগুলোকে তারাই ধরে রাখেন। তারাই পরিবারের জন্য কাজ করে যান নিরলসভাবে।’
মহিলা দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকের নারী দিবসে আপনাদেরকে শপথ নিতে হবে, আন্তর্জাতিক নারী দিবসে শুধু আপনাদের অধিকার আদায়ের জন্য নয়, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্যও লড়াই-সংগ্রাম করতে হবে।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আজকে সারাবিশ্বের মহিলাদের যতোকু প্রাপ্তি এসেছে, এটা কিন্তু আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এসেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশে যখন আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত হচ্ছে— তখন দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা, যিনি এ দেশের মহিলাদের জন্য নানামুখী উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন, নারীর ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করেছেন, সেই খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে।’
সুলতানা বিরোধী স্লোগান
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের র্যালির শুরুর সময় নিয়ে মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সমর্থকদের সঙ্গে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের মধ্যে হট্টগোল হয়েছে।
সকাল ১১টা ১০ মিনিটে নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের নিচে র্যালি পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শুরু হয়। এর পাঁচ মিনিট পর সেখানে আসেন মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ। এসময় সমাবেশের সঞ্চালনার দায়িত্বে থাকা সংগঠনটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান বক্তার নাম ঘোষণা করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সুলতানা আহমেদ উচ্চ স্বরে বলতে থাকেন— র্যালি শুরু হওয়া কথা দুপুর ১২টায়। ব্যানার, লিফলেট এবং ফেস্টুন ছাড়া কেন সমাবেশ শুরু হলো। তার কথার জবাব না দিয়ে হেলেন জেরিন সমাবেশের সঞ্চালনার কাজ চালিয়ে যান। তখন তার হাত থেকে মাইক্রোফোন কেড়ে নিয়ে মাঠিতে ফেলে দেন সুলতানা। এসময় পাশেই সংগঠনটির সভাপতি আফরোজা আব্বাস উপস্থিত থাকলেও তিনি এ ব্যাপারে নীরব ছিলেন।
আফরোজা আব্বাস দলীয় কার্যালয়ে চলে যাওয়ার পর তার সমর্থক নেতাকর্মীরা সুলতানাকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনি সময় দেবেন সকাল ৯টায়, আর আসবেন ১১টায় এটা হতে পারে না। তারা স্লোগান দেন— সুলতানা আপার অত্যাচার মানি না, মানবো না। আফরোজা ভাবির ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই।
পরে বেলা সাড়ে ১১টায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর,ড. মঈন খান, রুহুল কবির রিজভীসহ কার্যালয়ের নিচে আসেন আফরোজা আববাস।
এদিকে র্যালিকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই বিএনপির কার্যালয়ে সামনে প্রচুর সংখ্যক পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি সাদা পোশাকের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যর উপস্থিত ছিলেন।