ঢাকা: বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাড. খন্দকার আহসান হাবিব ও ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম চলমান আন্দোলনে দলের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপিকে আহ্বান জানিয়েছেন।
নির্বাচনে আসার বিকল্প নেই, সংঘাত এড়িয়ে সংলাপ করে সংকট নিরসন করতে হবে—এমন আহ্বান জানিয়ে এই দুই নেতা ‘স্বতন্ত্র গণতন্ত্র মঞ্চ’ নামে একটি নির্বাচনী সংগঠনেরও ঘোষণা দিয়েছেন।
বুধবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর মালিবাগ স্কাই সিটি হোটেল লাউঞ্জে সংবাদ সম্মেলন করে এমন ঘোষণা দেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির এই দুই সদস্য। সংবাদ সম্মেলনে ‘স্বতন্ত্র গণতন্ত্র মঞ্চ’র সঙ্গে বিএনপির ১২৫ জন নেতা আছেন বলে দাবি করেন তারা।
আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবেন বলেও জানান এই দুই নেতা।
তাদের সংবাদ সম্মেলনের কিছু পরেই বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই দুই নেতাকে বহিষ্কারের কথা জানানো হয়।
এদিকে, বিএনপি থেকে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে দল থেকে বহিষ্কারের খবর শুনে দলটির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য খন্দকার আহসান হাবিব বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ!’
তিনি বলেন, ‘এমন একটি দল করি, যে দলের কেন্দ্রীয় নেতা হয়েও আমার জেলার (টাঙ্গাইল) দলীয় কর্মকাণ্ডে বছরে একটি দাওয়াতও পাই না। আমাদের ইফতার মাহফিল, দলীয় কাউন্সিলসহ কোনো কর্মকাণ্ডে কখনও জানানোর ন্যূনতম সৌজন্যতাও দেখায় না।
শুধু শুধু মামলা খাই। প্রতি সপ্তাহে আদালতে মামলার হাজিরা দেই। হয়রানি, পেরেশানি হই। কিন্তু একটু সম্মানও পাই না। ‘
হাবিব আরও বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই অসন্তোষ ছিল মনের মধ্যে। তারা এমনিতে দল থেকে বাদ দেয় না। সুযোগও আসে না বের হয়ে আসার। একটি সুযোগ এসেছে। সংবাদ সম্মেলন করে বক্তব্য রেখেছি। শুনলাম দল থেকে বহিষ্কার করেছে। আলহামদুলিল্লাহ!’
দুই নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপির দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট খন্দকার আহসান হাবিব এবং ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ‘স্বতন্ত্র গণতন্ত্র মঞ্চ’র সঙ্গে বিএনপির ১২৫ জন নেতা আছেন বলে দাবি করেছেন অ্যাড. খন্দকার আহসান হাবিব ও ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম। তারা আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবেন বলেও জানান।
লিখিত বক্তব্যে খন্দকার আহসান হাবিব বলেন, সংসদীয় নির্বাচন গণতন্ত্র সুরক্ষার একটি উপাদান। বাংলাদেশের সংবিধানের বাধ্যবাধকতায় প্রতি ৫ বছর পরপর সংসদীয় নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তাদের প্রতিনিধিদের দ্বারা রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষমতা প্রদান করেন। ১১তম সংসদের মেয়াদ ২৯ জানুয়ারি, ২০২৪ সালে সমাপ্ত হবে। সংবিধানের বিধান অনুসারে, ২৯ জানুয়ারির পূর্বেই ১২তম সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতেই হবে। তা না হলে সংবিধান ভঙ্গের অভিযোগ উত্থাপিত হবে। ক্ষমতার পরিবর্তন একমাত্র নির্বাচনের মাধ্যমেই সম্ভব, অন্য কোনো উপায় সংবিধানে লিপিবদ্ধ নাই।
বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে নানা রকমের অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও সংসদ নির্বাচন করার ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন এবং সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব উপেক্ষা করার কোনো উপায় নেই বলে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন খন্দকার আহসান হাবিব ও ফখরুল ইসলাম।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৫ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দেন খন্দকার আহসান হাবিব। আর ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম ঝালকাঠি-২, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সাবেক ট্রাস্টি স্বপন সরকার রাজবাড়ী-১ এবং ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি মনিরুল ইসলাম মিন্টু টাঙ্গাইল-৮ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।