বগুড়ায় প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর সমাবেশে যোগ দিতে আসা ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের হামলায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
বুধবার (০১ জানুয়ারি) দুপুরে শহরের সার্কিট হাউজ সড়কে শহীদ খোকন পার্কের ভেতরে এ হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানায় পুলিশ।
হামলায় পারভেজ নামের এক কনস্টেবলের মাথা ফেটে যায়। চিকিৎসার জন্য তাকে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হামলায় আহত অপর চার পুলিশ সদস্য হলেন, বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী, সহকারী উপ-পরিদর্শক আশরাফুল, কনস্টেবল মামুন ও কনস্টেবল শিফাত।
ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ছাত্রদলের ১১ কর্মীকে আটক করে।
পুলিশ জানায়, ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা জুতা-স্যান্ডেল পায়ে শহীদ খোকন পার্কের শহীদ মিনারে উঠেছিল। সেখান থেকে নামিয়ে দিতে গেলে তারা পুলিশের ওপর হামলা চালায়।
জানা গেছে, ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বগুড়ায় ছাত্রদলের পক্ষ থেকে শহরের নবাববাড়ি সড়কে দুপুরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। ওই সমাবেশে যোগ দিতে ছাত্রদল নেতা-কর্মীরা সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন মহল্লা থেকে মিছিলসহ সার্কিট হাউস সড়কে শহীদ খোকন পার্কের ভেতরে সমবেত হতে থাকে। সেখান থেকেই একজোট হয়ে তাদের দলীয় কার্যালয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে জেলা বিএনপির আহবায়ক ও বগুড়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজসহ দলের সিনিয়র নেতারা খোকন পার্কে যান। এসময় খোকন পার্কের ভেতরে ছাত্রদলের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী সমবেত হয়। তাদের মধ্যে অনেকে পার্কের ভেতরে শহীদ মিনারে জুতা স্যান্ডেল পায়ে উঠে পারে। পরে পুলিশ ভেতরে গিয়ে তাদেরকে শহীদ মিনার থেকে নেমে যেতে বলেন। এর এক পর্যায়ে পুলিশের ধাওয়ায় ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের একাংশ ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। অপর অংশ পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুঁড়তে শুরু করে।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী জানান, ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা জুতা-স্যান্ডেল পায়ে শহীদ মিনারের ওপর উঠে তাণ্ডব চালাচ্ছিল। পুলিশ সেখানে গিয়ে ছাত্রদলের কর্মীদের শহীদ মিনার থেকে নেমে যেতে বলে।
তিনি বলেন, এ সময় কেউ কেউ নেমে গেলেও অন্যরা পুলিশ সদস্যদের উপর হামলা চালায়। এ সময় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ারও চেষ্টা হয়েছে। হামলায় আমিসহ আমাদের বাহিনীর পাঁচ সদস্য আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে কনস্টেবল পারভেজের মাথায় আঘাত করা হয়েছে।
পুলিশ হামলার ঘটনায় জড়িতদের ধরতে অভিযানে নামে। বিকেল পৌনে ৪টা পর্যন্ত ১১ কর্মীকে আটক করা হয়। তবে এদের মধ্যে ১০ জনের নাম পাওয়া গেছে।
আটকরা হলেন, সাব্বির (১৯), শাকিল (১৭), রাহিদ (১৬), ফরদিন (১৭), রাশেদুল (২২), আলাল হোসেন (২১), সাব্বির হোসেন (১৬), আরিফুল ইসলাম (১৩),জবহিল আলী (২১) ও আরাফাত আলী (১৯)।
বগুড়া সদর থানার ওসি এস এম বদিউজ্জামান জানান, পুলিশের ওপর হামলায় এখনও মামলা হয়নি। তবে জড়িতদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ছাত্রদল বগুড়া জেলা কমিটির সভাপতি আবু হাসান দাবি করেন, তাদের কোনো কর্মী পুলিশের ওপর হামলা চালায়নি।
তিনি বলেন, খোকন পার্কের পাশে আওয়ামী লীগ অফিস। সেখান থেকে কেউ পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল ছুঁড়ে থাকতে পারে।
বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক শফিক আমিন কাজল জানান, আহত পুলিশ সদস্যদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে তারা আশঙ্কামুক্ত।