২৩৯ রান টি-টোয়েন্টির যেকোনো বিচারেই প্রায় অসম্ভব লক্ষ্য। কিন্তু এমন পাহাড়সম লক্ষ্যও প্রায় তাড়া করে ফেলেছিল কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স। শেষ পর্যন্ত লড়েও অবশ্য ১৬ রানে হার মেনে নিতে হলো। তবে প্রশংসা প্রাপ্য ডেভিড মালানের। অবিশ্বাস্য লক্ষ্যকেও একসময় সম্ভব বলে মনে হচ্ছিল এই ইংলিশ ব্যাটসম্যানের কারণেই। তবে টপ অর্ডারে সৌম্য সরকার ও সাব্বির রহমানদের ব্যর্থতায় জিততে পারেনি কুমিল্লা।
বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ১৪তম ম্যাচে শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৩৮ রানের বিশাল সংগ্রহ পেয়েছিল চট্টগ্রাম। জবাবে ৭ উইকেট হারিয়ে ২২২ রানে থামে কুমিল্লার ইনিংস।
চট্টগ্রামের রানের পাহাড় টপকাতে গিয়ে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি কুমিল্লার। ৩২ রান তুলতেই বিদায় নেন দলটির টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান। আর কুমিল্লার সর্বনাশটা করেন বাঁহাতি পেসার মেহেদী হাসান রানা। সৌম্য সরকার ও সাব্বির রহমানসহ টপ অর্ডারের চার ব্যাটসম্যানই মেহেদীর শিকার।
নিজের প্রথম স্পেলে ২ ওভারে মাত্র ২ রান খরচে ৪ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন মেহেদী। তবে ইয়াসির আলীকে সঙ্গে নিয়ে প্রাথমিক ধাক্কা কাটানোর পর দাশুন শানাকাকে নিয়ে আসল লড়াই শুরু করেন ডেভিড মালান। যতক্ষণ ক্রিজে ছিলেন লক্ষ্যকে যথাসম্ভব কমিয়ে আনার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। ঝড়ের গতিতে রান তুলেছেন দুজনেই।
যেভাবে খেলছিলেন তাতে মালানের ইনিংসটা স্পেশাল হতে পারত। কিন্তু দলীয় ১৫২ রানে মেহেদীর চতুর্থ শিকার হতে হয় তাকে। এর আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৮৪ রানের ঝলমলে এক ইনিংস। ৩৮ বল স্থায়ী ইনিংসটি ৭টি চার ও ৫টি ছক্কায় সাজানো।
মালানের বিদায়ের পর লড়াই জারি রেখেছিলেন শানাকা। কিন্তু দ্রুত রান তোলার চাপ সামলাতে না পেরে মুক্তার আলীর বলে বোল্ড হওয়ার আগে এই লঙ্কানের ব্যাট থেকে আসে ৩ চার ও ৩ ছক্কায় সাজানো ৩৭ রানের ইনিংস।
শেষদিকে কুমিল্লার লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যান আবু হায়দার ১০ বলে ২৮ রানের ইনিংস খেললেও জয়ের জন্য তা যথেষ্ট ছিল না।
বল হাতে চট্টগ্রামের মেহেদী হাসান ৪ ওভারে ২৮ রান খরচে ৪ উইকেট তুলে নিয়েছেন। ১টি করে উইকেট ঝুলিতে পুরেছেন রুবেল হোসেন, কেসরিক উইলিয়ামস ও মুক্তার আলী। তবে রান খরচে মেহেদী ও রুবেল ছাড়া সবাই ছিলেন অকৃপণ।
এর আগে শুরুতে ব্যাট করতে নামা চট্টগ্রাম বিপিএলের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ পায়। গত আসরে চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে রংপুর রাইডার্সের ২৩৯ রান এখন পর্যন্ত তালিকার শীর্ষে আছে।
ব্যাটিংয়ে নেমে স্বাগতিক ওপেনার লেন্ডল সিমন্স করেন ১০ রান। আরেক ওপেনার আভিস্কা ফার্নান্দো ২৭ বলে তিনটি চার আর তিনটি ছক্কায় করেন ৪৮ রান। তিন নম্বরে নামা ইমরুল কায়েস ৪১ বলে ৯টি চার আর একটি ছক্কায় করেন ৬২ রান।
কুমিল্লার স্পিনার মুজিব উর রহমান ৪ ওভারে ৩১ রান দিয়ে নেন একটি উইকেট। সৌম্য সরকার ৩ ওভারে ৪৪ রানের বিনিময়ে তুলে নেন দুটি উইকেট। দাসুন শানাকা ৪ ওভারে ৪৭ রান দিয়ে পান একটি উইকেট।
ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হয়েছেন চট্টগ্রামের চ্যাডউইক ওয়ালটন।