নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) ও জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) বাতিলের দাবিতে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে শুরু হওয়া বিক্ষোভ আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে কমপক্ষে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
এর মধ্যে দু’জন কর্নাটকের ম্যাঙ্গালুরুতে এবং অন্যজন হলেন উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ে। এ ঘটনায় বিক্ষোভকারী ও পুলিশ সদস্যরা আহত হওয়ার কথা জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম। এছাড়া বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চলছে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও ত্রিপুরাসহ কমপক্ষে আটটি রাজ্যে।
খবরে বলা হয়, গত ক’দিন ধরেই ভারতের কয়েকটি রাজ্যে সিএএ ও এনআরসি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চলছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ম্যাঙ্গালুরুতে রাস্তায় নামে বিক্ষোভকারীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দেন সাধারণ মানুষও।
স্লোগান-মিছিলে উত্তাল হয়ে ওঠে শহর। এক পর্যায়ে মিছিল থেকে বাসসহ বিভিন্ন যানবাহনে ভাঙচুর চালানো হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশের ওপরও চলে হামলা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় পুলিশ। এতে দুইজন নিহত হন।
ম্যাঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার পিএস হর্ষ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় পুলিশ গুলি চালায়।
এদিকে ম্যাঙ্গালুরুতে পরিস্থিতি বিবেচনায় রোববার (১৯ ডিসেম্বর) পর্যন্ত কারফিউ (সান্ধ্য আইন) জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি ৪৮ ঘণ্টার জন্য শহরে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ইন্টারনেট বন্ধ রয়েছে লখনউয়েও।
পুলিশ কমিশনার পিএস হর্ষ জানান, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে রোববার পর্যন্ত শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে। প্রথমে শনিবার পর্যন্ত কারফিউ জারি হলেও পরে তা রোববার পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
এদিকে একই ঘটনার প্রতিবাদ-বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে কর্নাটকের রাজধানী শহর বেঙ্গালুরুর মানুষও। এখন পর্যন্ত বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ২৪ জনকে আটক করা হয়েছে। রাজ্যের বিধায়ক রিজওয়ান আরশাদ ও ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহকে আটক করা হয়ে। এছাড়া পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় শহরে ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে।
বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার ভাস্কর রাও বলেন, ‘শুক্রবার পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। আর আটক রিজওয়ান আরশাদ ও রামচন্দ্র গুহের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।’
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম জানায়, নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই বৃহস্পতিবার সকালে লখনউয়ে জড়ো হতে থাকেন সিএএ-এনআরসির প্রতিবাদকারীরা। একপর্যায়ে সড়কে গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
এ সময় বিক্ষোভকারীদের দমাতে লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ। এ সময় গুলিও ছোড়ে পুলিশ। এতে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।