টানা তিনদিন বিক্ষোভ মিছিলের পর বৃহস্পতি-শুক্রবার দুইদিন বিক্ষোভ সমাবেশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন পার্কসার্কাস ময়দানে সভা থেকে মমতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজেই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) সমর্থন করেন না। সে কারণে লোকসভা এবং রাজ্যসভায় যখন বিল পাশ হয়েছিল, দিনগুলোয় উপস্থিত ছিলেন না নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী নিজে বিল পাশের ভোটাভুটিতে অংশ নেননি। তাহলে ধরে নিতে হবে তিনি নিজেও সমর্থন করেন না এই আইন।
শুক্রবারের (২০ ডিসেম্বর) সভায় তিনি আরও বলেন, সিএবি এত ভালো তো প্রধানমন্ত্রী আপনি কেন ভোট দিলেন না? সংসদ ভবনেও আপনি ছিলেন না। ভোটও দিলেন না। তাহলে কি আপনিও সমর্থন করেন না। সমর্থন না করলে আইন প্রত্যাহার করে নিন। সিএএ নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হতে পারে তা অনুধাবন করেই দূরত্ব রেখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী?
এছাড়া এদিন তৃণমূল ভবনে দলের বিধায়ক ও সাংসদদের সঙ্গে বৈঠকের পর ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই সাংবাদিকদের সামনে গণভোট নিয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করলেন মমতা। তিনি বলেন, আমি নিরপেক্ষ সংস্থার দ্বারা গণভোট করানোর কথা বলেছিলাম। উদাহরণ হিসেবে রাষ্ট্রসংঘের কথা বলতে চেয়েছি। আমি চাই সিএএ নিয়ে নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে গণভোট হোক। এটা বোঝাতেই রাষ্ট্রসংঘের কথা বলেছিলাম।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) এক জনসভায় সিএএ নিয়ে রাষ্ট্রসংঘের মতো নিরপেক্ষ সংস্থার তত্ত্বাবধানে দেশজুড়ে গণভোট দাবি করেছিলেন মমতা।
এরপরই মমতার উদ্দেশ্যে তীব্র আক্রমণ করে বিজেপি। এদিন বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, মুখ্যমন্ত্রী তো নিজেকে ভারতীয় মনে করেন না। মনে করেন পশ্চিমবাংলা ভারতের বাইরে। তিনি নিজেকে পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রী নয় স্বঘোষিত প্রধানমন্ত্রী বলে মনে করেন। না হলে কী করে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে রাষ্ট্রসংঘের হস্তক্ষেপ দাবি করে ভারতের সার্বভৌমত্বকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করান মমতা?
এছাড়া সাংবিধানিক পদে থেকে মুখ্যমন্ত্রী এ ধরনের মন্তব্য করতে পারেন না বলে, মন্তব্য করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এর পাশাপাশি রাজ্যপাল বলেন, একটি আইন যা সর্বসম্মতভাবে পাশ হয়ে গেছে তা মানছি না বলে টিভি মিডিয়ায় কীভাবে মুখ্যমন্ত্রী বিজ্ঞাপন দেন? মুখ্যমন্ত্রী পদটাও তো সাংবিধানিক।