প্রশাসনে কি রাজাকার ঢুকে পড়েছে, প্রশ্ন বাদশার

দেশের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক পদগুলোতে রাজাকার ঢুকে পড়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা।

সম্প্রতি স্থগিত হওয়া রাজাকারের তালিকায় যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর রাজশাহীর গোলাম আরিফ টিপুসহ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধার নাম থাকায়, এই তালিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তা গভীরভাবে তদন্তের দাবিও জানান বাদশা।

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজশাহী মহানগরীর উপকণ্ঠ কাটাখালি বাজারে ওয়ার্কার্স পার্টির এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যের শুরুতেই তালিকা প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এ দাবি জানান ফজলে হোসেন বাদশা।

তিনি বলেন, একটা অবাক কাণ্ড দেখলাম। রাজশাহীতে যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছেন, তাদের নাম রাজাকারের তালিকায়। এ নিয়ে আমাকে অনেকে প্রশ্ন করেছেন, প্রশাসনের ভেতর কি রাজাকার ঢুকে পড়েছে? একই প্রশ্ন আমারও।

‘রাজাকারের প্রেতাত্মারা যে এখনও সক্রিয়, সেটা এই তালিকার মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়ে গেছে। আজ স্বাধীনতার ৫০ বছর হতে চলেছে। এখনও যদি আমরা স্বাধীনতাবিরোধীদের হাত দুর্বল করতে না পারি, তাহলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে পড়বে। আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন না হলে স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ পাওয়া যাবে না।’

দেশে এখন ‘নব্য রাজাকার’ সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে বাদশা বলেন, স্বাধীনতার আগে ২২টা পরিবার এদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য করতো। আর পশ্চিম পাকিস্তানে টাকা পাঠিয়ে দিত। আমরা তাদের রাজাকার বলতাম। এখন যারা বাংলাদেশের টাকা বিদেশে পাচার করছে, তারা নব্য রাজাকার।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের শ্রমিকরা বিদেশে কষ্টার্জিত রেমিট্যান্স দেশে পাঠায়। দেশ সমৃদ্ধ হয়। দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়। আর কিছু নব্য রাজাকার দেশের টাকা পাচার করে। বিদেশে বাড়ি-গাড়ি করে। এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। টাকা পাচার, লুটপাট, অনিয়ম, দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। আর শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষার জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে।

কৃষকদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত, রাজশাহী পাটকলের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ এবং সামাজিক ন্যায্যতা, সমতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ২১ দফার ভিত্তিতে সংগ্রাম গড়ে তোলার আহ্বানে ওয়ার্কার্স পার্টির পবা উপজেলার কাটাখালি পৌরসভা কমিটি এই জনসভার আয়োজন করে।

এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন- ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক দেবাশিষ প্রামাণিক দেবু, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য এন্তাজুল হক বাবু, জেলার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আশরাফুল হক তোতা, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের জেলার সভাপতি ফেরদৌস জামিল টুটুল এবং জাতীয় কৃষক সমিতির জেলার সভাপতি কয়েস উদ্দিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *