বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সমাবেশে বোমা হামলা মামলায় ১০ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে দণ্ডিতদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া দুই আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ রবিউল আলম এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মুফতি মঈন উদ্দিন শেখ, আরিফ হাসান সুমন, মাওলানা সাব্বির আহমেদ, শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মহিবুল মুত্তাকিন, আমিনুল মুরসালিন, মুফতি আব্দুল হাই, মুফতি শফিকুর রহমান ও নূর ইসলাম।
আর খালাসপ্রাপ্ত দুজন হলেন- মশিউর রহমান ও রফিকুল আলম মিরাজ। তারা দুজনই পলাতক।
দীর্ঘ দুই দশক আগের চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় গতবছরের ১ ডিসেম্বর মামলার যুক্তিতর্ক শেষ হয়। পরে রায়ের জন্য সোমবার দিন ঠিক করেন আদালত।
মামলায় যেসব আসামিকে বিচারে সোপর্দ করা হয়েছে তাদের প্রত্যেকেই সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হবেন বলে আশা করছে রাষ্ট্রপক্ষ।
২০১৪ সালের ২১ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষে মোট ১০৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৮ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন। তবে আসামিপক্ষে কেউ সাফাই সাক্ষী দেননি।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, রাজধানীর পল্টন ময়দানে ২০০১ সালের ২০ জানুয়ারি সিপিবির সমাবেশে দুর্বৃত্তদের বোমা হামলায় ৫ জন নিহত এবং ২০ জন আহত হয়। ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে আসামিদের বিরুদ্ধে নির্ভরযোগ্য তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি মর্মে তদন্ত শেষে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছিল।
২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা ও ২০০৫ সালের আগস্টে দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলা হয়। এসব ঘটনায় জঙ্গিরা জড়িত প্রমাণ পাওয়ার পর ২০০৫ সালে মামলাটি আবার পুনঃতদন্তের আদেশ দেন আদালত।
মামলাটি পুনঃতদন্তের পর ২০১৩ সালের ২৭ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে অভিযোগপত্র দাখিল করে সিআইডি পুলিশের ইন্সপেক্টর মৃণাল কান্তি সাহা।
এদিকে মামলার আসামি হরকতুল জিহাদ নেতা মুফতি আবদুল হান্নানের ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় এই মামলার অভিযোগ থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বাকি আসামিদের মধ্যে প্রথম চারজন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকলেও ৮ জন পলাতক রয়েছেন।