কুষ্টিয়া: সরকারি ওষুধ ও বিক্রির টাকা আত্মসাতের দায়ে দুদকের করা মামলায় চুয়াডাঙ্গার সাবেক সিভিল সার্জন ডা. মো. নাজমুল হক ও ভাণ্ডার কর্মকর্তা একে এম ফজলুল হককে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডসহ অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ বিশেষ আদালতের বিচারক মো. আশরাফুল ইসলাম দণ্ডিত আসামিদের অনুপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন সিলেট কানাইঘাট উপজেলার বীরদল বাজার গ্রামের বাসিন্দা মৃত হাজি আরব আলীর ছেলে ও চুয়াডাঙ্গার সাবেক সিভিল সার্জন ডা. মো. নাজমুল হক (৬৯) এবং সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ইছাকুণ্ডু গ্রামের বাসিন্দা মৃত. আজিজুল হকের ছেলে চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের স্টোর অফিসার এ কে এম ফজলুল হক (৬২)।
মামলার এজাহার সূত্রের বরাত দিয়ে দুদক কুষ্টিয়ার কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট আল মুজাহিদ হোসেন মিঠু জানান, তারা চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে দায়িত্বরত অবস্থায় পরস্পর যোগসাজশে ২০০৫ সালে একটি এবং ২০০৬ সালে চারটিসহ মোট পাঁচটি চাহিদাপত্রের অনুকূলে ঢাকাস্থ তেঁজগাওয়ের কেন্দ্রীয় ওষুধাগার থেকে বরাদ্দ হওয়া ইউনিসেফ ও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার অনুদানে পাওয়া ওষুধ আত্মসাৎ করে।
ওষুধের তৎকালীন বাজারমূল্য ছিল ২২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এগুলো দুর্যোগকালীন ও আপদকালীন সময়ে জনস্বাস্থ্য রক্ষায় অনুদানে পাওয়া ওষুধ।
অভিযুক্তরা ওই ওষুধ গুদামে জমা না দিয়ে তা বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেন। দুদকের প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় কুষ্টিয়ার উপ-সহকারী পরিচালক মো. শহীদুল ইসলাম মোড়ল বাদী হয়ে জড়িত দুইজনের নাম উল্লেখ করে দ:বি: ৪০৯/১০৯ এবং ৪৭ সালে ২ নম্বর আইনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ ধারায় অপরাধ সংগঠিত হয়েছে উল্লেখ করে মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি এজাহারনামীয় দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে চার্জশীট দাখিল করেন দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত কার্যালয় কুষ্টিয়ার উপ-পরিচালক আব্দুল গাফফার চৌধুরী।
রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট আল মুজাহিদ হোসেন মিঠু বলেন, এ মামলায় সাক্ষ্য শুনানি শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীত প্রমাণিত হওয়ায় সিভিল সার্জন ডা. মো. নাজমুল হক এবং স্টোরকিপার একেএম ফজলুল হককে পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আর দুই মাসের সাজা ভোগের আদেশ দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। সেইসঙ্গে আত্মসাৎ করা ওষুধের মূল্যমানে দু’জনকে পৃথকভাবে ২৫ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আর ও ছয় মাসের কারাভোগের আদেশ দেন আদালত।
যেহেতু রায় ঘোষণার সময় আসামিরা পলাতক ছিলেন, সে কারণে সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বরাবর আসামিদের গ্রেপ্তারের আদেশ দিয়েছেন আদালত।