অর্ধশত ধর্ষণ ও স্ত্রীকে হত্যার স্বীকারোক্তি আদালতে

মাত্র ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করে জাসিম উদ্দিন রানা (২৩)। এভাবে গত চার বছরে প্রতারণার মাধ্যমে তার পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে অর্ধশত নারী। সে ভুয়া কাবিন করে বিয়েও করে দুজনকে। অবশেষে দ্বিতীয় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে গত বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) রাতে গ্রেফতার হয় রানা। সে বরগুনার পাথরঘাটার থানার পদ্মা করমজাতলা এলাকার আব্দুল জলিলের ছেলে।

মঙ্গলবার (১০ মার্চ) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাউসার আলমের আদালতে সিরিয়াল ধর্ষণ ও হত্যার কথা আদালতে স্বীকার করে জবানবন্দি দেয় রানা।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভোলাব তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার কাঞ্চন পৌরসভার কাঞ্চন দক্ষিণ বাজার এলাকার মনির মাস্টারের বাড়ির ভাড়াটিয়া ও প্রাণ গ্রুপের বিক্রয় প্রতিনিধি (এসআর) জসিমউদ্দিন রানা তার স্ত্রী সুরভী আক্তারকে (১৯) শ্বাসরোধে হত্যা করে পালিয়ে যায়। পুলিশ সোমবার রাতে বরগুনার পাথরঘাটা থানার পদ্মা করমজাতলা এলাকার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে।’

স্বীকারোক্তিতে রানা জানায়, ১৫ বছর বয়স থেকেই তার বিকৃত যৌন লালসা ছিল। সে স্কুল জীবন থেকেই বিভিন্ন কিশোরীকে প্রেমের অভিনয়ে ধর্ষণ করতো। এ কারণে এলাকা ছাড়া হয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে বেড়াতো রানা। সে যেখানেই যেতো প্রতারণা করে ধর্ষণ করতো। গত ২০১৬ সালে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নোনদা এলাকার নান্নু মিয়ার মেয়ে নাজনীন বেগম প্রেমের টানে তার কাছে আসে। পরে নকল কাজী দিয়ে বিয়ের অভিনয় করে নাজনীনের সঙ্গে সংসার শুরু করে রানা। তাদের পারভিন নামে এক মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়।

গত বছর তাকে ফেলে পালিয়ে সাভার চলে আসে রানা। সেখানে মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্কের জেরে মাদারীপুরের সদর থানাধীন চরমুগুরিয়া এলাকার দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে সুরভী আক্তার তার কাছে আসলে আবারও নকল কাজী দিয়ে বিয়ে করে সংসার শুরু করে রানা। কিন্তু বিয়ের ব্যাপারটি রানার কয়েকজন কথিত প্রেমিকা টের পেয়ে যাওয়ায় সে গত দুই মাস আগে রূপগঞ্জে চলে আসে। সেখানে এসআর পদে চাকরি নিয়ে কাঞ্চন বাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করে।

এদিকে তার স্ত্রী সুরভি ভুয়া বিয়ে ও বহু নারীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি টের পেয়ে তাকে আসল কাবিন করতে চাপ দেয়। এরপর বৃহস্পতিবার রাতে সুরভির গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করে। এ ঘটনায় সুরভীর বাবা বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহামুদুল হাসান বলেন, ‘রানার অন্য অপকর্মগুলোর তদন্ত করে আমরা দেখছি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *