করোনা ভাইরাসজনিত কারণে সৃষ্ট বিশ্ব পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর উদ্বোধন অনুষ্ঠান পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। পূর্বসূচি অনুযায়ী জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে এ অনুষ্ঠান হওয়ার কথা থাকলেও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সে সিদ্ধান্ত বদল হয়েছে। এর পরিবর্তে ভিন্নমাত্রায় ইলেক্ট্রনিক ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশ্বব্যাপী উদ্বোধন অনুষ্ঠানটি প্রচার করা হবে।
মঙ্গলবার (১০ মার্চ) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদ্বোধন অনুষ্ঠান পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত গঠিত কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, মুজিববর্ষের প্রথম দিন বিকালে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে এক লাখ মানুষের উপস্থিতিতে উদ্বোধন অনুষ্ঠান করার কথা ছিল। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী জনসমাগম এড়াতে টেলিভিশন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশের জনগণের জন্য ঘরে বসে দেখার ব্যবস্থা নিতে ভিন্নমাত্রায় উদ্বোধন অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত নেয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি। এ লক্ষে একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা হয়।
সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূরকে আহ্বায়ক করে গঠিত এই কমিটির সভা শেষে জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী জানান, দেশে-বিদেশে ক্ষণগণনা শুরু হওয়ার পর পুরো জাতির মাঝে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর উদ্বোধন অনুষ্ঠান সম্পর্কে উদ্দীপনা ছড়িয়ে পড়েছিল। জনগণের সম্পৃক্ততার আগ্রহ বিবেচনায় রেখে পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে উদ্বোধনীটি ভিন্নমাত্রায় পরিবেশিত হবে। ১৭ই মার্চ বর্ণাঢ্য আয়োজনের পরিকল্পনা ঠিক রেখে ইলেক্ট্রনিক ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি দেড়-দুই ঘণ্টা ব্যাপ্তির ধারণ করা অথবা লাইভ প্রোগ্রামের মাধ্যমে দেশ-বিদেশে সম্প্রচার করা হবে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির বাণী, জাতির উদ্দেশে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ, বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানার বক্তব্য, কবিতা পাঠ ইত্যাদি থাকবে।
ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী আরও জানান, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিবসটি জাতীয় শিশু দিবস বিধায় শত শিশুর কণ্ঠে জাতীয় সংগীত ও দলীয় সংগীতের পরিবেশনা থাকবে। শত শিল্পীর পরিবেশনায় যন্ত্রসংগীত, মুজিববর্ষের থিম সং, বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম তুলে ধরে একটি থিয়েট্রিকাল পারফরম্যান্স ও বিশ্বখ্যাত কোরিওগ্রাফার আকরাম খানের পরিবেশনা থাকছে এই অনুষ্ঠানে।
তিনি জানান, অনুষ্ঠান প্রচারের সময় পরে জানানো হবে। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে রাতে ৮টায় বঙ্গবন্ধুর জন্মক্ষণ আতশবাজির মাধ্যমে স্মরণের পরিকল্পনাও রাখা হয়েছে। এছাড়াও দিবসটি স্মরণে আলোকসজ্জা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় সীমিত আকারে আনন্দ অনুষ্ঠান এবং মিষ্টান্ন বিতরণ করা হবে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক এস এম হারুন-অর-রশীদ, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, বেসরকারি টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স (এ্যাটকো)-এর সভাপতি ও মাছরাঙা টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী, সিনিয়র সহ-সভাপতি ও একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু এবং কমিটির অন্য সদস্যরা।