রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বিল্লাল ফার্মা ও খিলগাঁওয়ের লাজ ফার্মায় ডাকাতির ‘মূল হোতা’ আলী হোসেন টিটু বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। সোমবার (১৩ এপ্রিল) রাত ১২টার দিকে মোহাম্মদপুর বসিলার তিন রাস্তা মোড় সংলগ্ন এলাকায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিমের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মোহাম্মদপুর জোন) আনিস উদ্দিন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘দুটি স্থানে ডাকাতির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল এমন পাঁচ জনকে গত ১২ এপ্রিল (রবিবার) গ্রেফতার করা হয়। এরপর ১৩ এপ্রিল তাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে টিটুর তথ্য পাওয়া যায়। তাকে গ্রেফতার করতে গেলে ডিবি পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে তার মৃত্যু হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘টিটু এই ডাকাত চক্রের মূল হোতা। তার নেতৃত্বে ডাকাতিগুলো হয়েছে। এই ডাকাত দলের অন্য সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
এর আগে গ্রেফতার হওয়া এই ডাকাত দলের অন্য সদস্যরা হলো- সোহেল (৩৬), সোহরাব (৩০), নেওয়াজ (২২), শাহীন (২৫) ও রাজু (২৫)।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, গ্রেফতার হওয়া সোহেল ও নিহত টিটু ডাকাত দলটির নেতৃত্ব দিয়ে আসছিল। চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি করা অর্থের ৪০ ভাগ নিয়ে যেতো তারা। বাকি অর্থ অন্যদের মধ্যে সমান ভাগে ভাগ করে দেওয়া হতো। টিটুর গ্রামের বাড়ি সিলেট। সে থাকতো ঢাকার ডেমরা এলাকায়। অন্যদের মধ্যে সোহেলের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে। মিরপুর-১ নম্বর এলাকায় থাকতো সে। শাহিনের বাড়ি বরিশালে ও সোহরাবের বাড়ি শরীয়তপুরে। তারা দুজনেই কেরানীগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা। এছাড়া নেওয়াজ থাকতো মিরপুর চিড়িয়াখানা এলাকায়।
প্রসঙ্গত, গত ১ এপ্রিল রাত একটার দিকে মোহাম্মদপুরের কলেজগেট এলাকার বিল্লাল ফার্মা ও ৫ এপ্রিল খিলগাঁওয়ের লাজ ফার্মায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। তারা প্রথমে একটি পিকআপে করে মুখে মাস্ক ও গামছা পেঁচিয়ে আসে। ফার্মেসিতে ঢুকে চাপাতি, দা ও লোহার রডের ভয় দেখিয়ে নগদ টাকা, মোবাইল ও ল্যাপটপ নিয়ে যায়। দুটি ঘটনায় মোহাম্মদপুর ও খিলগাঁও থানায় পৃথক মামলা দায়ের করা হয়। ডাকাত দলের সদস্যদের ধরতে থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পশ্চিম বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনাল টিম ও পল্লবী জোনাল টিম মামলা দুটির ছায়া তদন্ত শুরু করে।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, লাজ ফার্মায় থাকা সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে প্রথমে দলনেতা সোহেলকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছে, ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত মিনি ট্রাক দুটিও তারা ছিনতাই করেছিল। একটি মিনি ট্রাক শাহ আলী এলাকা থেকে এবং আরেকটি আশুলিয়া-টঙ্গী রোড থেকে ছিনতাই করেছিল। ওই ট্রাক নিয়ে প্রতি সপ্তাহে তারা ৩ থেকে ৪ দিন ছিনতাইয়ের জন্য বের হতো। বিশেষ করে বাড্ডা, রামপুরা, কালসি, বেড়িবাঁধ, আদাবর, মিরপুর, যাত্রাবাড়ী, তুরাগ, রূপগঞ্জ, কাঁচপুর ব্রিজ এলাকায় তারা নিয়মিত ডাকাতি ও ছিনতাই করতো।