কলকাতায় করোনা ভাইরাসে নারীর মৃত্যু!

চীনের প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডাসহ বিশ্বের ডজনখানেক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। তালিকা থেকে বাদ যায়নি ভারতও। সোমবার থাইল্যান্ডের ৩২ বছরের এক নারী কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন। হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, করোনা ভাইরাসের মতো যাবতীয় উপসর্গ নিয়েই হাসপাতালে গিয়েছিলেন তিনি। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২১ জানুয়ারি রাত ১১টার দিকে ওই নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পেটের সমস্যা, বমি বমি ভাব এবং জ্বরের উপসর্গ দেখা দিয়েছিল তার। শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় আইসিইউ-তে নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচানোর সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়।

২০১৯ সালের নভেম্বরের শেষদিকে ভারতে যান ওই থাই নারী। তার আগে নেপালেও গিয়েছিলেন তিনি।

হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, ১৮ জানুয়ারি থেকে তিনি পেটের সমস্যা, বমি বমি ভাব এবং জ্বরে আক্রান্ত হতে শুরু করেছিলেন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ২১ জানুয়ারি রাত ১১টার দিকে তিনি চিকিৎসা নিতে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যান। অবস্থা দেখেই তাকে আইসিইউতে ভর্তি করে কর্তৃপক্ষ।

ওই নারীর মৃত্যু সম্পর্কে ইতোমধ্যেই থাই কনসুলেট জেনারেলকে অবহিত করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা মৃতের সব পরীক্ষার রিপোর্ট চেয়েছেন। থাইল্যান্ডে করোনা ভাইরাসের আক্রমণে এখন পর্যন্ত অন্তত আট জনের মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে করোনা আতঙ্কে সতর্ক পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। দিল্লি ও মুম্বাই শহরের কয়েকটি হাসপাতালে অনেক রোগীকে আলাদাভাবে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া কেরালায় চার শতাধিক মানুষকে নিজেদের বাড়িতেই নজরদারিতে রাখা হয়েছে। ভারতের বিভিন্ন বিমানবন্দরে প্রায় ৩০ হাজার যাত্রীকে পরীক্ষা করা হয়েছে।

ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ডা. শওকত আলী জানিয়েছেন, কেরালায় তিনটি শহরের বিভিন্ন হাসপাতালের নির্জন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন সাত রোগী পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। এদের মধ্যে ছয় জনের শরীরেই করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। আর বাকি একজনের ফলাফল এখনও হাতে আসেনি।

গত ১ জানুয়ারির পর চীন ভ্রমণ করে আসা ব্যক্তিদের জ্বর, কাশি বা শ্বাসকষ্টের মতো লক্ষণ থাকলে কাছের চিকিৎসা কেন্দ্রে হাজির হওয়ার পরামর্শ দেয় ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এছাড়া করোনার উৎপত্তিস্থল চীনের উহান প্রদেশে আটকেপড়া ৩০০ ভারতীয় নাগরিকের মধ্যে ২৫০ জনকে দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েছে দিল্লি। উহানে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যেই ১০০ ছাড়িয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে চার হাজারেরও বেশি মানুষ। জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান, নেপাল, ফ্রান্স, সৌদি আরব, কানাডাসহ অন্তত ১২টি দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *