মালয়েশিয়ার অষ্টম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন প্রবীণ রাজনীতিক মুহিউদ্দিন ইয়াসিন। স্থানীয় সময় ১ মার্চ রবিবার সকালে তিনি রাজদরবারে শপথ গ্রহণ করেন।
মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের পদার্পণ ১৯৭৮ সালে। ওই বছরই তিনি প্রথম এমপি নির্বাচিত হন। ৪২ বছরের রাজনৈতিক জীবনে পররাষ্ট্র, শিল্প ও বাণিজ্যসহ ছয়টি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন মুহিউদ্দিন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের মেয়াদে ছয় বছর উপপ্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তবে নাজিবের আর্থিক কেলেঙ্কারি নিয়ে কথা বলায় ২০১৫ সালে তাকে বরখাস্ত করা হয়। এরপর মাহাথিরের সঙ্গে মিলে ২০১৬ সালে পার্টি প্রিবুমি বারসাতু মালয়েশিয়া (পিপিবিএম) নামের রাজনৈতিক দল গঠন করেন। প্রধানমন্ত্রী হতে মাহাথির দলের দায়িত্ব ছাড়লে তার স্থলাভিষিক্ত হন মুহিউদ্দিন ইয়াসিন। ২০১৮ সালে মাহাথির সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি। এবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও মাহাথিরের স্থলাভিষিক্ত হলেন এই ঝানু রাজনীতিক।
এদিকে মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ এনেছেন সদ্য পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ। রবিবার তার শপথ গ্রহণের আগে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন মাহাথির। তিনি বলেন, মুহিউদ্দিন বহুদিন ধরে এই এজেন্ডা নিয়ে খেলছিলেন। তাতে তিনি সফল হয়েছেন।
মালয়েশিয়ার রাজা সুলতান আবদুল্লাহ সুলতান আহমাদ শাহ জানিয়েছেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ এমপিদের মতামতের ভিত্তিতেই মুহিউদ্দিন ইয়াসিনকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বাছাই করা হয়েছে। তবে তিনি আসলেই সংখ্যাগরিষ্ঠ এমপিদের সমর্থন পেয়েছেন কিনা তা যাচাইয়ের জন্য পার্লামেন্টের জরুরি অধিবেশন দাবি করেছেন মাহাথির। সংবাদ সম্মেলনে মাহাথির দাবি করেন, তার প্রতি বেশিরভাগ এমপি-র সমর্থন থাকলেও রাজা তাকে দেখতে চাইছেন না। ফলে অপেক্ষাকৃত কম জনপ্রিয় একজনকে প্রধানমন্ত্রী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
২০২০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি আকস্মিকভাবে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন মাহাথির মোহাম্মদ। ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতেই তার ওই পদত্যাগ বলে প্রতীয়মান হচ্ছিল। আরও জোরালোভাবে ফিরতে চাইছিলেন তিনি। মাহাথিরের পদত্যাগের পর প্রধানমন্ত্রী বাছাইয়ে পার্লামেন্টের ২২২ এমপির সাক্ষাৎকার নেন দেশটির রাজা। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাদের পছন্দের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয় ওই সাক্ষাৎকারে। এর ভিত্তিতেই গত দুই দশক ধরে ক্ষমতার লড়াইয়ে মুখোমুখি থাকা মাহাথির মোহাম্মদ ও আনোয়ার ইব্রাহিমকে পাশ কাটিয়ে ইয়াসিনকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বাছাই করা হয়।