নবমবারের মতো সভাপতি শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের ফের সাধারণ সম্পাদক

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ নিয়ে নবমবারের মতো দলটির সভাপতি নির্বাচিত হলেন তিনি। আর টানা দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন ওবায়দুল কাদের।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনার নাম প্রস্তাব করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুল মতিন খসরু। এতে সমর্থন দেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য।

পরে নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন অন্যান্য কাউন্সিলরদের তিনবার জিজ্ঞাসা করলে তারাও শেখ হাসিনার নামই বলেন। পরে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় শেখ হাসিনাকে দলের সভাপতি ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান।

দলের সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনার বিকল্প কারো নামই আলোচনায় আসেনি। তাকে ফের সভাপতি নির্বাচিত করা হবে বলে আগে থেকেই বলে আসছিলেন দলের নেতাকর্মীরা।

কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ওবায়দুল কাদেরের নাম প্রস্তাব করেন দলের সদ্য বিলুপ্ত ঘোষিত কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক। এতে সমর্থন দেন সদ্য বিলুপ্ত ঘোষিত কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান।

পরে নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন অন্যান্য কাউন্সিলরদের জিজ্ঞাসা করলে তারাও ওবায়দুল কাদেরের নামই বলেন। এতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ওবায়দুল কাদেরকে দলের সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান।

আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন ঘিরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল দলের ‘সাধারণ সম্পাদক’ পদ। কে আসবে এই পদে, এ নিয়ে ছিল নানা গুঞ্জন।

কারণ সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনার বিকল্প কারো নাম আলোচনায় আসেনি। তাই সভাপতি হিসেবে তার নাম ঘোষণা ছিল আনুষ্ঠানিকতার বিষয় মাত্র। এ কারণে সবার নজর ছিল দলের দ্বিতীয় শীর্ষ পদটির দিকে।

এ পদে অনেকের নামই আলোচনায় ছিল। তবে আলোচনার শীর্ষে ছিলেন ওবায়দুল কাদেরই। এছাড়াও আলোচনায় ছিলেন- নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, তথ্যমন্ত্রী ডা. হাছান মাহমুদ, মাহবুব উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমানও।

তবে অবশেষে ওবায়দুল কাদেরকেই ফের দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়েছে।

এর আগে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ কাউন্সিল অধিবেশন শুরু হয়।

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়। ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনের উদ্বোধন এবং উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দলটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত সভাপতি হয়েছেন সাতজন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া দলটির সভাপতি হিসেবে সর্বোচ্চ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করছেন তারই কন্যা শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নবমবারের মতো দলের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী তিনবার করে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন।

আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ দুইবার এবং এএইচএম কামারুজ্জামান ও আবদুল মালেক উকিল একবার করে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দিন ৭৫ পরবর্তী পরিস্থিতিতে একবার দলের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত দলের দ্বিতীয় শীর্ষ পদ ‘সাধারণ সম্পাদক’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন নয়জন। সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ চারবার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জিল্লুর রহমান।

এছাড়া তাজউদ্দিন আহমেদ তিনবার, আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী দুইবার করে দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক ও আবদুল জলিল একবার করে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। অন্যদিকে দ্বিতীয়বারের মতো সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলেন ওবায়দুল কাদের।

অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে ১৭ জনের নাম ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে চারজনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে আগের কমিটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *