আসন্ন ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে কোনও অনিয়ম হলে সরকার পতনের আন্দোলন শুরু করা হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটর এলাকায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) নির্বাচন পরিচালনা কমিটির মতবিনিময় সভায় তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
বিএনপির প্রার্থীদের হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে অভিযোগ করে গয়েশ্বর রায় বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের বলছেন, আমরা নাকি হারার আগে হেরে যাই। আপনার কথাটা তো অসত্য নয়। কারণ, ৩০ তারিখের ভোটের যদি ২৯ তারিখে ফলাফল দেন, তাহলে তো আমাদের হারার আগে হারা ছাড়া বিকল্প থাকে না।’
নির্বাচনে অন্তরায় সৃষ্টি না করে ভোটারদের নির্ভয়ে ভোটদানের সুযোগ সৃষ্টি করতে কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা হারার আগে হারি নাই, আমরা হারবো না। নির্বাচন নিয়ে যেকোনও ধরনের ষড়যন্ত্রের আভাস যদি প্রত্যক্ষ করি তাহলে এই নির্বাচন হবে আগামীদিনের সরকার পতন আন্দোলনের সূচনা। কোনও দিকনির্দেশনার অপেক্ষায় আমরা থাকবো না।’ জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় বিএনপি রাস্তায় নেমে পড়বে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গয়েশ্বর বলেন, ‘ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা না করা পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরবো না। প্রয়োজনে লাশ হয়ে কবরে যাবো। এই দৃঢ়তা নিয়ে ঢাকা মহানগরের সব নেতাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে সেই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেবেন আজকের মেয়র প্রার্থী প্রধান সেনাপতি তাবিথ আউয়াল।’
তাবিথ আউয়ালকে ভোটাররা পছন্দ করেন দাবি করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘তিনি নতুন প্রজন্মের পছন্দ। শিক্ষিত-মার্জিত সবার পছন্দ, যারা বিএনপি করে তাদেরও পছন্দ। তিনি যথেষ্ট জ্ঞান রাখেন, তা ইতোমধ্যে জনগণের কাছে দৃশ্যমান।’
নির্বাচন সুষ্ঠু করে নিজেদের জনপ্রিয়তা যাচাই করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে গয়েশ্বর আরও বলেন, ‘আমরা আশা করছি, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো ৩০ তারিখের পরিবর্তে ২৯ তারিখে ভোট না করে জনগণের ভাবনা প্রকাশ করতে দেবেন। সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায় সৃষ্টি না করে মানুষ আপনাদের কীভাবে পরিমাপ করে সেটা যাচাই করুন। জনগণকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে সহযোগিতা করুন।’
জনগণের ভোটের প্রতি আগ্রহ রয়েছে উল্লেখ করে গয়েশ্বর বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে জনগণের মধ্যে উৎসাহ সৃষ্টি করা। সেটা মুখে নয়, কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে জনগণ উৎসাহবোধ করবে সেই পরিবেশ সৃষ্টি করা।’
গয়েশ্বর অভিযোগ করেন, ইতোমধ্যে বিএনপির সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের বাড়ি বাড়ি হানা দেওয়া হচ্ছে এবং কাউকে জোরপূর্বক বসিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এতে পরিমাপ করা যায় নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কি হবে না।
সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, বরকত উল্লাহ বুলু, মোহাম্মদ শাজাহান, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, ঢাকা উত্তরে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল প্রমুখ।